শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:৫৩

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ
বরিশালে ভিজিডি’র চাল নিয়ে তথ্য ফাঁস করলেন চেয়ারম্যানরা

বরিশালে ভিজিডি’র চাল নিয়ে তথ্য ফাঁস করলেন চেয়ারম্যানরা

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ভিজিডি বা ভিজিএফ এর চাল নিয়ে নানা কেলেংকারীর খবর হরহামেষাই পাওয়া যায়। এবার ভিজিডি চাল নিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। আর এতে জড়িত রয়েছেন সরকারি খাদ্য গুদামের দায়িত্বে থাকা কর্মচারী-কর্মকর্তা থেকে শুরু ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানরা বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। অথচ সরকারি চাল যাতে অসহায় নারীরা সঠিকভাবে পেতে পারেন এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ কেজি চালের বস্তা করা হয়ে থাকে। তারপরেও থামানো যাচ্ছে চাল চুরি বা আত্মসাৎ। আর অভিযোগটি এবার উঠেছে চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে। তবে খাদ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যানরা সাধু সাজতে এ ধরণের মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন বলে অভিযোগের জবাব আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, অতি দরিদ্র নারীদের খাদ্য সহায়তার অংশ হিসেবে কার্ডধারী প্রত্যেক নারীকে বিনামূল্যে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু বিনামূল্যের চাল থেকে প্রতি বছর বরিশালে সরকারি গুদাম থেকে ওজনে কম দিয়ে কোটি কোটি টাকার চাল রেখে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে খাদ্য অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বরিশাল জেলা মহিলা বিষয় কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জেলার ১০ উপজেলায় ভিজিডি কার্ডধারীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৯১৪ জন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২ হাজার ৯৯৪ জন, আগৈলঝাড়ায় ২ হাজার ৭৯ জন, বাবুগঞ্জে ২ হাজার ৩২৫ জন, বাকেরগঞ্জে ৩ হাজার ৩০৯ জন, বানারীপাড়া ২ হাজার ৪৩২ জন, গৌরনদীতে ২ হাজার ৬১১ জন, হিজলায় ৩ হাজার ৬২৪ জন, মুলাদীতে ২ হাজার ৫৬০ এবং উজিরপুরে ২ হাজার ৪৩৬ জন।

জেলার ২৭ হাজার ৯১৪ কার্ডধারীর বিপরীতে ২০১৮ সালে ১০ হাজার ৪৯ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয় (এক কোটি ৪৯ হাজার ৪০ কেজি)। ইউপি চেয়ারম্যানদের অভিযোগ খাদ্য অফিস থেকে চাল নিয়ে আসার পর দেখা যায় প্রতি বস্তায় গড়ে দুই কেজি চাল কম। এই হিসেবে এক টন চালে (এক হাজার কেজি) ৬৬ কেজি কম পাওয়া যায়। বেশিরভাগ চেয়ারম্যানদের দাবি, খাদ্য অফিস থেকে ওজন মাপার সময় কারসাজির মাধ্যমে শত শত টন চাল মেরে দিয়ে তা কালো বাজারে বিক্রি করা হয়। হিসেব করা দেখা গেছে গড়ে যদি প্রতি টন চালে ৬৬ কেজি করে ঘাটতি হয় তাহলে মোট বরাদ্দে ঘাটতি ৬৬৩ দশমিক ২৩ মেট্রিক টন।

একাধিক সূত্র বলছে, ভিজিডির চাল সরকার ভর্তুকি দিয়ে প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে কেনে। কিন্তু চেয়ারম্যান ও খাদ্য অফিস অনিয়ম করে যে চাল অত্মসাৎ করে তা বাজারে বিক্রি করা হয় ৩০ টাকা কেজি দরে। এ হিসেবে এক টন চাল কালোবাজারে বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকায়। হিসেব করে দেখা গেছে কেবল বরিশাল জেলাতেই ভিজিডির চালে যে কম দেওয়া হয় তার মূল্য দাঁড়ায় ১ কোটি ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ টাকা (৩০ টাকা কেজি দরে)। খাদ্য অফিসের সব কর্মকর্তা- কর্মচারীরা এ টাকার ভাগ পায়। শুধু ভিজিডির চালই ৯ বছরে অন্যান্য খাতে যে বরাদ্দ আসে সেখানেও মাপে কম দিয়ে বছরে লাখ লাখ টাকা আয় করছে খাদ্য অফিস। এর ভাগ পাচ্ছে তালিকা অনুযায়ী খাদ্য অফিসের টপ টু বটম।

বরিশাল সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আলম চৌধুরী বলেন, ‘আগে ৫০ কেজির বস্তা ভেঙে ৩০ কেজির বস্তা বানাতো। তখন প্রতি বস্তায় ৪/৫ কেজি কম হতো। এখন সেলাই করা বস্তা দেওয়া হয়। তারপরেও প্রতি বস্তায় কিছু কম হবেই এতে কোনও সন্দেহ নেই। খাদ্য অফিস প্রায়ই বলে তাদের সেলাই করা বস্তা নেই। হাতে বাধা বস্তা আনলেই সমস্যা।’
শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না বলেন, ‘প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি থাকার কথা থাকলেও ২৭/২৮ কেজি পাই। মাঝে মাঝে ইনটেক বস্তা দেয় আবার খোলা বস্তাও সাধে, আমরা নিতে চাই না। এনিয়ে অনেক ঝামেলা হয়।’

মুলাদী উপজেলায় ২৫শ’ ৬০ জন ভিজিডি কার্ডধারীর বিপরীতে ৯২১.৬ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু মুসা হিমু বলেন, ঘাটতি হবেই। আপ-ডাউনে কমে-বাড়ে। ৫০ কেজির জায়গায় ৪৮ কেজিও থাকে। খাদ্য অফিসে ইনটেক বস্তা কমিয়ে রাখে। মাপার সময় এমনভাবে টান দেয় তখন কমে যায়। বস্তায় ২/৩ কেজি কম ধরতেই পারেন।

অভিযোগের ব্যাপারে বরিশাল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অবনী মোহন দাস বলেন, ‘উনারা (চেয়ারম্যান) কোন কারনে কম নেবেন? কমের প্রশ্ন আসে না। এভাবে অভিযোগ করে পার পাওয়া যায় না। তারা শতভাগ মেপে নেবেন। কম হলে আমার কাছে অভিযোগ করবেন। তিনি বলেন, প্রয়োজনে দুইবার মেপে চাল নেবেন। আমরা এখন ৩০ কেজির বস্তা দেই। নিতেও সুবিধা, ইনটেক বস্তা। বোঝেনইতো একজনের অপরাধ আরেকজনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া আর কী।’

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net